কম পড়াশোনা করেও এই ৭টি স্কিল শিখে চাকরি ছাড়াও আয় করুন|Best 7 Skills To Earn Money

Spread the love

ডিগ্রি না থাকলে চাকরি বা আয় করা অসম্ভব, এমন ধারণা এখন পুরোনো। এখন বর্তমানে অনেক ধরনের কর্মমুখী স্কিল রয়েছে যা শিখে ভালো টাকা ইনকাম করা যাবে প্রতি মাসে। হাতে-কলমে শিখে নেওয়া কিছু কাজে দক্ষ হলে নিজে ব্যবসা করা, চাকরি পাওয়া বা ফ্রীল্যান্সিং সবই সম্ভব। নিচে আমি এমন সাতটি স্কিল (Best 7 Skills To Earn Money) নিয়ে বলেছি যেগুলো তুলনামূলকভাবে শিখতে সহজ, খরচ বেশি লাগে না এবং বাজারে চাহিদাও আছে। প্রতিটি অংশে কীভাবে শিখবেন, কত সময় লাগতে পারে, আর প্রাথমিক খরচ কেমন হতে পারে, সবই সহজ ভাষায় দিয়েছি। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট টি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

সম্পর্কিত পোস্ট পড়ুন

নিজের নোটস PDF বিক্রি করে ইনকাম করুন! কিভাবে শুরু করবেন?

কম শিক্ষায় আয়ের জন্য ৭টি বাস্তব স্কিল (Real Skills)

এবার কোন কোন স্কিল গুলো শিখবেন? কত টাকা খরচ হবে? কোথা থেকে শিখবেন? বিস্তারিত নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।

১. ড্রাইভিং (Driving)

কি কাজ হবে: ট্যাক্সি, অ্যাম্বুলেন্স, স্কুল ভ্যান, লজিস্টিক ভ্যান বা মালবোঝাই ট্রাকে ড্রাইভার হিসেবে কাজ। কমার্শিয়াল লাইসেন্স (LMV/HMV) নিলে পারফেক্ট।

কত সময় লাগবে: মৌলিক ড্রাইভিং শেখা ২–৮ সপ্তাহ; লাইসেন্স ও কমার্শিয়াল প্রশিক্ষণ নিয়ে ১–৩ মাস।

খরচ (আনুমানিক): প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স ফি ₹5,000–₹25,000 (কোর্সভেদে)।

আয়ের সম্ভাবনা: নিয়োজিতভাবে মাসে ₹10,000–₹40,000+ (জব/লোকেশন অনুসারে)।

কিভাবে শুরু করবেন: স্থানীয় RTO-এ লাইসেন্স প্রক্রিয়া জানুন; ড্রাইভিং স্কুলে ছোট কোর্স নিন; কাস্টমার-কেয়ার শিখুন।

২. মোবাইল ও অ্যাপ্লায়েন্স রিপেয়ারিং

কি কাজ হবে: মোবাইল, টিভি, ফ্রিজ, মাইক্রোওয়েভ বা এসি রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত।

কত সময় লাগবে: বেসিক মোবাইল রিপেয়ার ১–৩ মাস; বড় অ্যাপ্লায়েন্স ৩–৬ মাস।

খরচ (আনুমানিক): টুলস ও পাঠ্য প্রশিক্ষণ প্রায় ₹5,000–₹30,000।

আয়ের সম্ভাবনা: নিজ দোকান বা হোম সার্ভিসে মাসে ₹8,000–₹50,000+ (ক্লায়েন্টের উপর নির্ভর করে)।

কিভাবে শুরু করবেন: ITI/ভোকেশনাল কোর্স বা স্থানীয় টেকশপে অ্যাপ্রেন্টিশিপি নিন; ইউটিউব থেকে বেসিক টিউটোরিয়াল দেখেও শুরু করা যায়।

৩. ইলেকট্রিশিয়ান বা প্লাম্বারের কাজ

কি কাজ হবে: ইলেকট্রিক ও প্লাম্বিং ইনস্টলেশন, মেরামত, বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ।

কত সময় লাগবে: মৌলিক দক্ষতা ৩–৬ মাস; প্রশিক্ষণ-সহ অভিজ্ঞতা নিয়ে ১ বছর ভালো করে।

খরচ (আনুমানিক): সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণে ₹5,000–₹20,000। আয়ের সম্ভাবনা: ফুল-টাইম কাজ করলে মাসে ₹10,000–₹45,000+।

কিভাবে শুরু করবেন: স্থানীয় ট্রেড স্কুল বা অভিজ্ঞ মাস্টারের নীচে কাজ করে হাত গড়ুন; সেফটি (বিম সাপোর্ট) শিখুন।

৪. ডেলিভারি পার্টনার (Delivery Partner)

কি কাজ হবে: খাবার/প্যাকেজ ডেলিভারি – Swiggy, Zomato, Amazon বা লোকাল সার্ভিসে ডেলিভারি।

কত সময় লাগবে: রেজিস্ট্রেশন ও KYC-সহ ১–৭ দিন।

খরচ (আনুমানিক): স্মার্টফোন ও বাইক থাকলে কম খরচ; নতুন হলে বাকি খরচ ~₹30,000–₹70,000 (বাইক)।

আয়ের সম্ভাবনা: পার-ডেলিভারি ভিত্তিতে; ফুল-টাইম করলে মাসে ₹10,000–₹35,000 (লোকেশন ও সময় অনুসারে)।

কিভাবে শুরু করবেন: প্ল্যাটফর্মে রেজিস্টার করুন, KYC ও ডকুমেন্ট জমা দিন, শিফট নিন; সঠিক রুট-কৌশল শিখুন।

৫. কুকিং বা বেকিং (Cooking or Baking)

কি কাজ হবে: হোম-কিচেন, ক্যাটারিং, কেক অর্ডার, বা ফুড-বিজনেস।

কত সময় লাগবে: বেসিক রান্না ১–৩ মাস; বেকিং-স্পেশালিটি ৩–৬ মাস।

খরচ (আনুমানিক): বেসিক ইনস্টারুমেন্ট ও উপকরণ ~₹5,000–₹30,000; লাইসেন্স/স্বাস্থ্য সার্টিফিকেট লাগতে পারে।

আয়ের সম্ভাবনা: অর্ডার ভিত্তিতে মাসে ₹5,000–₹50,000+ (গ্রাহক ও উপকরণের উপর নির্ভর করে)।

কিভাবে শুরু করবেন: স্থানীয় রান্না/বেকিং ক্লাস নিন, ছোট স্কেল থেকে শুরু করে লোকাল মার্কেটিং করুন।

৬. বেসিক কম্পিউটার ও ডেটা এন্ট্রি

কি কাজ হবে: টাইপিং, MS Word/Excel, অনলাইন ফরম ফিলআপ, ডেটা এন্ট্রি জব।

কত সময় লাগবে: বেসিক ১–২ মাস; উন্নত Excel/QuickBooks হলে ৩–৬ মাস।

খরচ (আনুমানিক): কম, মোবাইল/কম্পিউটার ও ইন্টারনেট খরচ ব্যতীত প্রশিক্ষণ কিছুতে ফ্রি।

আয়ের সম্ভাবনা: ফ্রিল্যান্স ছোট কাজ থেকে অফিসে জব—মাসে ₹6,000–₹25,000।

কিভাবে শুরু করবেন: অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং রেজিস্টার করে ছোটো কাজ নিন, দ্রুত টাইপিং-স্পিড বাড়ান।

৭. সেলাই বা টেইলারিং (Sewing/Tailoring)

কি কাজ হবে: কাপড় কাটাছাঁট, মেরামত, অর্ডার অনুযায়ী পোশাক সেলাই।

কত সময় লাগবে: বেসিক ১–৩ মাস; দক্ষতা নিয়ে ব্যবসা ৬–১২ মাসে সম্ভব।

খরচ (আনুমানিক): সেলাই মেশিন ও সরঞ্জাম ₹5,000–₹25,000।

আয়ের সম্ভাবনা: ফ্রিল্যান্স/দোকান থেকে মাসে ₹8,000–₹40,000+।

কিভাবে শুরু করবেন: স্থানীয় কোর্ট/দর্জি থেকে শেখুন; অনলাইনে অর্ডার নিন বা মোবাইল ভিত্তিক প্রচার করুন।

কীভাবে এই স্কিলগুলি শিখবেন? (How to Learn)

উপরের দেওয়া স্কিল গুলি খুব সহজেই কোথা থেকে শিখবেন তা নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।

১) ভোকেশনাল ট্রেনিং বা ITI থেকে

সরকারি ITI বা ভোকেশনাল কোর্সগুলো কম খরচে ভালো শেখায়। PMKVY-র মতো স্কিমও অনেক ট্রেনিং সেন্টার সাপোর্ট করে। এটা বিশ্বাসযোগ্য এবং প্লেসমেন্ট-চ্যানেলও থাকে।

২) স্থানীয় কোনো ওয়ার্কশপে কাজ শিখে

ঠিকানার কাছাকাছি মাস্টারের কাছে অ্যাপ্রেন্টিস হিসেবে কাজ করে হাতে-কলমে শিখুন। অনেক সময় মাস্টাররা কাজ করে শেখায়, যা বাজারে বেশি কাজে লাগে।

৩) ইউটিউব বা অনলাইন রিসোর্স দেখে

অনেক দক্ষতা (কুকিং, মোবাইল রিপেয়ার, বেসিক কম্পিউটার) ইউটিউবে ভালো টিউটোরিয়াল আছে। কিন্তু প্র্যাকটিস করা জরুরি। ইউটিউব + পার্ট-টাইম ওয়ার্ক ভাল সমন্বয়।

কিছু জরুরি কথা (Important Points)

১) সততা ও পরিশ্রমই মূল চাবিকাঠি

যে কাজই করুন, মান রাখুন, কাজের মান বাড়ালে ক্লায়েন্ট বাড়ে। সময়মতো ডেলিভারি, ভদ্র আচরণ ও পরিস্কার বিল দিতে শিখুন।

২) শেখা কখনই বন্ধ করবেন না

শিক্ষাগত যোগ্যতা কম হলেও নতুন টেকনিক শেখা চলবে, নতুন টুল ও কৌশল শিখলে আয় বাড়ানো সহজ।

সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

এই কাজগুলো শিখতে কতদিন সময় লাগে?

বেশিরভাগ বেসিক স্কিল ১–৩ মাসে মৌলিক করে তোলা যায়। দক্ষ হয়ে ওঠা ও নিজ-ব্যবসা চালাতে ৬–১২ মাস সময় লাগতে পারে।

শুরু করতে কি অনেক টাকা লাগে?

না, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শুরু খরচ কম। ডেলিভারি বা বড়ো মেশিন হলে খরচ বাড়ে। তবে অনুগত্য, কমিটমেন্ট ও ছোট খরচেই ব্যবসা শুরু করা যায়।

মেয়েদের জন্য কোন স্কিলটি সবচেয়ে ভালো?

মেয়েরা নিরাপত্তা ও সুবিধা দেখে বেছে নিতে পারেন। সেলাই, কুকিং/বেকিং, ডেটা এন্ট্রি, মোবাইল ফটোগ্রাফি খুব উপযোগী। অনেকেই হোম-বেইজড বিজনেস করে সফল হচ্ছেন।

শেষ কথা (Conclusion)

কম পড়াশোনা মানেই কম সম্ভাবনা নয়। হাতের কাজ, সততা ও পড়াশোনা-ছাড়া শেখা আপনাকে দ্রুত অর্থোপার্জনে নিয়ে যাবে। আজই এক স্কিল বেছে নিন, স্থানীয় ট্রেনিং বা ইউটিউব দিয়ে শিখুন, ছোট কাজ নিন, রিভিউ তৈরি করুন, ধীরে ধীরে আয় বাড়ান। এই Best Skill গুলির মধ্যে আপনার পছন্দ এবং আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী যেকোনো একটি স্কিল নির্বাচন করুন এবং আজ থেকে শেখা শুরু করুন। যদি আপনাদের এই সম্বন্ধে কোনো প্রশ্ন থাকে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

▪️ক্যারিয়ার সংক্রান্ত পোস্ট: এখানে পড়ুন

▪️Trending Post: Read More


Spread the love

Leave a Comment