পশ্চিমবঙ্গের ভোটার ভেরিফিকেশন কি?|বিস্তারিত তথ্য জানুন

Spread the love

ভারতের নাগরিক হিসাবে ভোটার তালিকায় নাম থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। সরকারি বিভিন্ন রকমের প্রকল্পের সুবিধা এবং বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রে আমরা জানি ভোটার কার্ড লাগে তাই ভোটার তালিকায় নাম থাকা কিংবা একটি ভোটার কার্ড থাকা অতি আবশ্যিক যা আমাদের ভারতীয় নাগরিক হিসাবে পরিচয় দেয়। এবার পশ্চিমবঙ্গের ভোটাররা কিভাবে স্টেপ বাই স্টেপ এই ভোটার ভেরিফিকেশন করবেন? এবং এই ভেরিফিকেশন করার সময় যাবতীয় যে সমস্ত তথ্য প্রয়োজন ওই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের ভোটার ভেরিফিকেশন

নির্দিষ্ট সময় অন্তর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মধ্যে যখন ভোটার ভেরিফিকেশন হয়, তখন অবশ্যই ভেরিফিকেশন করতে হবে। আর না করলে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদও যেতে পারে। তাই ভোটার ভেরিফিকেশন এর সময় দেশের প্রতিটি নাগরিককে এই Voter Verification এ্ অংশগ্রহণ করতে হবে এবং যাবতীয় তথ্য দিয়ে Verification করতে হবে।

তাই আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে ভোটার ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হবে, তা verification হতে পারে অনলাইনে কিং অফলাইন। Learn how to verify your voter id card?

ভোটার ভেরিফিকেশন কেন জরুরি

সময়ের সাথে সাথে ভোটার তালিকার কিছু পরিবর্তন, ভেরিফিকেশন এবং সংযোজন করতে হয়। কারণ –

  • সময়ের সঙ্গে অনেকের মৃত্যু ঘটে।
  • একজনের নাম একাধিক কেন্দ্রে রয়েছে ।
  • অন্য দেশ থেকে অবৈধভাবে আমাদের দেশে এসে ভুয়ো ভোটার তৈরি।
  • নতুন নামের সংযোজন অর্থাৎ যাদের বয়স ১৮ হয়ে গেছে তাদের নতুন ভোটার কার্ড তৈরি।
  • বিভিন্ন ধরনের Correction(Name, Address, Photo, Mobile no, etc)
  • Duplicate ভোটার ID কার্ড চিহ্নিত করা।

এই সমস্ত কিছু সমস্যার সমাধান করার জন্য এবং নতুন ভাবে ভোটার তালিকা তৈরি করার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে একটি ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া করানো হয় সারা দেশ জুড়ে যার ফলে নতুন সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রকাশ হয়। এবার এই ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া SIR(special intensive revesion) এবং SSR(Special Summary Revision) এর মাধ্যমে হয়ে থাকে।

 

 

 

নির্বাচনকে সামনে রেখে আপডেটের প্রয়োজনীয়তা

এবার যাতে নির্বাচনের সময় সঠিকভাবে নির্বাচনটা হয় তার জন্য এই ভোটার ভেরিফিকেশন অত্যন্ত জরুরী আর না হলে অনেক মৃত ভোটার, ভুয়ো ভোটার এদের আইডি কার্ড ব্যবহার করে ভুয়ো/Fake ভোট দিয়ে দেওয়া হবে। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে এই ভেরিফিকেশন সময় সময় করানো হয়। যাতে ভোটার তালিকা সম্পূর্ণ সঠিক থাকে।

ভোটার ভেরিফিকেশন বলতে কী বোঝায়?

ভোটার ভেরিফিকেশন হলো ভোটার কার্ডের যাবতীয় তথ্য যাচাই যেমন- নাম, জন্ম তারিখ, ঠিকানা, ছবি এবং যে ব্যক্তির ভোটার কার্ড ওই ব্যক্তি জীবিত আছে কিনা ওই ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিক কিনা ইত্যাদি যাচাই করা হয় ভোটার ভেরিফিকেশন এর মধ্য দিয়ে।

ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য

এবার ভোটার কার্ডের ভেরিফিকেশন এর উদ্দেশ্য একটাই, ভোটার কার্ডের তালিকা সঠিক রাখা। তার জন্য মৃত ভোটার বাদ দেওয়া, ভুয়ো ভোটার বাদ দেওয়া, বিদেশ থেকে আসা অবৈধ ভোটার বাদ দেওয়া ,একই নামে অনেক ভোটার কার্ড থাকলে ওই সমস্ত নাম বাদ দেওয়া, ইত্যাদি।

কে কে ভেরিফিকেশন করতে পারেন?

এই ভোটার কার্ডের ভেরিফিকেশন সবাই করতে পারে অর্থাৎ যারা ভারতীয় নাগরিক তাদের প্রত্যেককে এই ভেরিফিকেশন করতে হবে আর যদি না করে তাহলে পরবর্তীতে ভোটার তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়াও হতে পারে। 

তার জন্য প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য এই ভেরিফিকেশনে অংশগ্রহণ করে ভোটার ভেরিফিকেশন এর প্রক্রিয়া টিকে সাফল্যমন্ডিত করা।

কেন ভেরিফিকেশন করা গুরুত্বপূর্ণ?

বিভিন্ন ধরনের কারণেই এই ভোটার কার্ডের ভেরিফিকেশন করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভোটার কার্ডের ভেরিফিকেশন না করলে বছরের পর বছর অনেক ডুপ্লিকেট ভোটার, মৃত ভোটার, অন্য দেশ থেকে অবৈধভাবে প্রবেশ করে ভুয়া ভোটার তৈরি, ভোটার কার্ডের যেকোনো ব্যক্তির বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন যেমন- নাম, ঠিকানা, বয়স, ছবি ইত্যাদির আপডেট ভোটার তালিকায় করার জন্য ভোটার করতেই হবে।

বিশেষ করে, এখন বর্তমানে এত পরিমানে Duplicate চলছে , এই ভেরিফিকেশন না করলে কয়েক লক্ষ লক্ষ ভুয়ো ভোটার ও অবৈধভাবে ভোট দিয়ে দেবে। তার জন্য এই ভোটার ভেরিফিকেশন করাটা অতি আবশ্যিক।

 

West Bengal Voter Verification

পশ্চিমবঙ্গে ভোটার ভেরিফিকেশনের সময়সীমা ও ঘোষণা

জুন মাসে বিহার রাজ্যে ভোটার ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পর শুরু হতে চলেছে আমাদের পশ্চিমবঙ্গে ভোটার প্রক্রিয়া।

এই ২০২৫ সালের আগে পশ্চিমবঙ্গে ভোটার ভেরিফিকেশন হয়েছিল ২০০২ সালে জানুয়ারি মাসে। যেখানে প্রায় ২৮ লক্ষ ভোটার বাদ পড়ে বিভিন্ন কারণে যেমন মৃত ভোটার, Duplicate Voter, ইত্যাদি।

এবার ২০০২ সালের পর এই ২০২৫ সালে অনেক বড় ধরনের শুরু হচ্ছে ভোটার ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া SIR( Special Intensive Revesion)এর মাধ্যমে।

তবে এখনো পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যের তরফ থেকে ভোটার ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত কোনো অফিশিয়াল নোটিফিকেশন প্রকাশ করা হয়নি তবে খুব শীঘ্রই নোটিফিকেশন আসবে এবং ভোটার ভেরিফিকেশন শুরু হবে।

 

কীভাবে ভোটার ভেরিফিকেশন করবেন? (Step-by-Step Guide)

এই ভোটার কার্ডের ভেরিফিকেশন দুই ধরনের হবে- ১) অনলাইনে কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপ থেকে এই ভেরিফিকেশন করা যাবে ভোটার কার্ডের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করে।

 

২) অফলাইনে ভেরিফিকেশন করা যাবে BLO অর্থাৎ বুথ লেভেল অফিসার এর মাধ্যম দিয়ে।

অনলাইনে ভেরিফিকেশন:

অনলাইনে ভেরিফিকেশন করার জন্য ভোটার কার্ডের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করে নির্দিষ্ট ফর্ম ফিলাপ করতে হবে আপনার ভোটার কার্ডের ভুল অনুযায়ী।

অর্থাৎ উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে , আপনার যদি ভোটার কার্ডে নামের ভুল,ঠিকানার ভুল, বাবার নামের ভুল, ইত্যাদি কোন ধরনের ভুল থেকে থাকে তাহলে আপনাকে Form No 8 ফিলাপ করে সাবমিট করতে হবে।

ফর্ম-৮ পূরণ পদ্ধতি

  • প্রথমে Voter Card এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট https://voters.eci.gov.in/ – এ Visit করুন।
  • আপনার ID এবং Password দিয়ে Login করুন।
  • Fill Form No 8 এখানে ক্লিক করুন ।
  • সম্পূর্ণ ফর্ম ফিলাপ করুন, আপনার যাবতীয় তথ্য দিয়ে, এবং অবশ্যই ভোটার কার্ডের কোন অংশে সংশোধন করবেন ওইটা Selection করে নেবেন।
  • ফর্ম ফিলাপ করার পর সাবমিট করুন। এবং Acknowledgement Number Print করুন।
  • Acknowledgement Number দিয়ে Application Status চেক করুন।

যদি BDO office থেকে phone আসে Hearing এর জন্য তাহলে আপনাকে যাবতীয় Original Document নিয়ে Hearing এর দিন উপস্থিত হতে হবে।

অফলাইনে ভেরিফিকেশন:

ক্যাম্প অফিস বা বুথ লেভেল অফিসার (BLO)-এর মাধ্যমে আপনি সংশোধন করতে পারেন। আপনার ভোটার কার্ডে যে অংশে ভুল রয়েছে, সেই অনুযায়ী  সেই অনুযায়ী ফর্ম জমা করুন।

প্রয়োজনীয় নথিপত্র ফর্মের সঙ্গে Attached করুন।

এবার, আপনার জমা দেওয়া ফর্মের Status আপনি Voter Card এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে চেক করতে পারবেন।

Application Approved হলে আপনার নতুন Voter ID Card BLO/ Post office এ আসবে।

ভোটার ভেরিফিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

  • Epic Card/Voter ID card (মূল তথ্য যাচাই এর প্রমাণ)
  • পরিচয়পত্র (যেমন: আধার, পাসপোর্ট)
  • Passport/PAN/Driving Licence
  • বসবাস প্রমাণ (বৈদ্যুতিক বিল, রেশন কার্ড, ব্যাংক এর Statement)
  • Passport size photograph
  • Birth certificate/ Matric certificate
  • ছবি ও স্বাক্ষর সংক্রান্ত নির্দেশনা

তবে West Bengal voter verification সংক্রান্ত অফিসিয়াল নোটিফিকেশন এলে আরো বিস্তারিত জানা যাবে।

 

ভেরিফিকেশনের পরে কী হয়?

Voter Verification হওয়ার পর সমস্ত তথ্য যাচাই হবে এবং নতুন ভোটার তালিকায় সংশোধিত তথ্য আপডেট করা হবে।

তবে Duplicate Voter, মৃত ভোটার, বিদেশের অবৈধ ভোটার নতুন ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে।

 

গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক ও অ্যাপ

ভোটার কার্ডের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট: Visit Here

Voter Service Portal: Visit Here

Voter Helpline App: Click Here

Frequently Asked Questions

ভোটার কার্ডের ভেরিফিকেশন সবাইকে করতে হবে?

হ্যাঁ, অবশ্যই করতে হবে। পুরোনো কিংবা নতুন ভোটার সবাইকে এই ভেরিফিকেশন করতে হবে।

ভোটার ভেরিফিকেশন কি কি ডকুমেন্টস লাগবে?

আধার কার্ড, প্যান কার্ড, রেশন কার্ড, জন্ম সার্টিফিকেট, মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট, ভোটার লিস্ট, passport size photo, ইত্যাদি।

Conclusion

এককথায় বলতে গেলে, এই ভোটার ভেরিফিকেশন মানে ভোটার কার্ডের যাবতীয় তথ্য যাচাই করা। যা নির্দিষ্ট সময় সময় হয়ে থাকে এবং এই ভেরিফিকেশন হওয়ার ফলে ভোটার তালিকা থেকে-  ডুপ্লিকেট ভোটার, মৃত ভোটার ,অবৈধ ভোটার এবং ভোটার কার্ডের যাবতীয় তথ্য সংশোধিত হয়।

এবার এই ভেরিফিকেশন করার প্রধান উদ্দেশ্য হল- নির্বাচন সঠিকভাবে করা। তাই অবশ্যই যখন দেশে নিজের রাজ্যের মধ্যে ভোটার ভেরিফিকেশন হবে অবশ্যই ভোটার ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে হবে এবং যথাযথভাবে এই প্রক্রিয়াটিকে সুসম্পন্ন করতে হবে – কারন আমরা দেশের নাগরিক।

আমাদের Website: Home Page

আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প: বিস্তারিত পড়ুন


Spread the love

Leave a Comment