সব তীর্থ বারবার,
গঙ্গাসাগর একবার।
জয় কপিল মুনির জয়, জয় কপিল মুনির জয়, জয় কপিল মুনির জয়।
গঙ্গাসাগর মেলা ভারতের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশ। তাই কুম্ভ মেলার পর হিন্দু ধর্মের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেলা হলো Gangasagar Mela. প্রতি বছর মকর সংক্রান্তির সময় লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী এখানে সমবেত হন গঙ্গা নদী ও বঙ্গোপসাগরের সঙ্গমস্থলে পুণ্য স্নানের জন্য। বিশ্বাস করা হয়, এই স্নান মানুষের পাপমোচন ও আত্মশুদ্ধি এনে দেয়। পাশাপাশি এখানে কপিল মুনির আশ্রমও রয়েছে, যা আধ্যাত্মিকতার কেন্দ্রবিন্দু। যার টানে পূর্ণার্থীরা দেশ-বিদেশ থেকে এসে এখানে গঙ্গা স্নান করেন। তাই এই ২০২৬ সালে ও প্রচুর দর্শনার্থী Gangasagar Mela তে আসবেন। তাই আপনাদের সুবিধার্থে Gangasagar Mela 2026 সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি এই পোষ্টের মাধ্যমে। তাই শেষ পর্যন্ত পোস্টটি পড়ুন।
📅গঙ্গাসাগর মেলা ২০২৬: তারিখ ও পুণ্য স্নান(Gangasagar Mela 2026 Date)
মেলার তারিখ: ৮ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত
প্রধান পুণ্য স্নান দিবস: ১৪ জানুয়ারি ২০২৬ (মকর সংক্রান্তি – ভোর থেকে সারা দিন)
গঙ্গা আরতি: ১২, ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি – তিন দিনব্যাপী বিশেষ আরতি অনুষ্ঠিত হবে।
ই-দর্শন ও ই-স্নান সুবিধা: সরকারি ওয়েবসাইট gangasagar.in বা “Go Gangasagar” অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে দর্শন ও পুণ্যস্নানের লাইভ স্ট্রিমিং দেখা যাবে। এছাড়া অনলাইনে গঙ্গাজল ও প্রসাদ অর্ডার করা যাবে।
জরুরী তথ্য: এই পোষ্টের যাবতীয় তথ্য ইন্টারনেট থেকে রিসার্চ করে লেখা হয়েছে। তথ্য যাচাই করার জন্য gangasagar.in এই অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিসিট করুন।
🚆গঙ্গাসাগরে যাওয়ার রুট ও পরিবহন ব্যবস্থা
গঙ্গাসাগর কলকাতা থেকে প্রায় ১২৪ কিমি দূরে অবস্থিত। এখানে পৌঁছাতে ট্রেন, বাস ও ফেরি — তিনটি মাধ্যমই ব্যবহার করা যায়। তাছাড়াও, এখন বর্তমানে আকাশ পথে হেলিকপ্টার দিয়ে আসা যায়। তবে কম খরচে Gangasagar Mela তে আসার জন্য Train, Bus এবং Ferry Route ব্যবহার করতে পারেন।

১. Gangasagar Mela By Train ( ট্রেন রুট)
শিয়ালদহ থেকে নামখানা বা লক্ষ্মীকান্তপুর পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চলে।
সময় লাগে প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা।
ভাড়া প্রায় ২০–৪০ টাকা।
মেলার সময় অতিরিক্ত স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হবে। 👉 টিপ: সকালবেলার ট্রেন ধরলে ভিড় এড়ানো যায়।
২. Gangasagar Mela By Bus (বাস রুট)

এসপ্ল্যানেড/হাওড়া থেকে নামখানা বা কাকদ্বীপ পর্যন্ত বাস সার্ভিস নিয়মিত চলে।
ভাড়া ১০০–১৮০ টাকা।
ভ্রমণের সময় ৩–৪ ঘণ্টা।
২০২৬ সালের মেলায় ২,২৫০টি সরকারি ও ২৫০টি বেসরকারি বাস চলবে।
Gangasagar Mela By Ferry Service /Lounch (ফেরি/লঞ্চ পরিষেবা)
নামখানা থেকে কচুবেড়িয়া পর্যন্ত ফেরি সার্ভিস সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রতি ৩০–৪৫ মিনিটে চলে।
ভ্রমণের সময় ৩০–৪৫ মিনিট।
ভাড়া ২০–৪০ টাকা।
২০২৬ মেলায় ৩২টি বড় ভেসেল, ১০০টিরও বেশি লঞ্চ, এবং ৯টি বার্জ থাকবে।
👉 টিপ: কুয়াশার সময় জিপিএস-নিয়ন্ত্রিত ফেরি বেছে নিন।
🚖 ৪. স্থানীয় পরিবহন
নামখানা থেকে ফেরিঘাট: টোটো বা অটো, ভাড়া ২০–৩০ টাকা।
কচুবেড়িয়া থেকে মন্দির পর্যন্ত: টোটো/শেয়ার অটো, ভাড়া ১০–২০ টাকা।
নিরাপত্তা নির্দেশিকা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা
⚓ ফেরি নিরাপত্তা
১) ফেরিতে লাইফ জ্যাকেট ।
২) সব লঞ্চে জিপিএস ও ইসরো ট্র্যাকিং সিস্টেম থাকবে।
৩) কুয়াশা নিয়ন্ত্রণে অ্যান্টি-ফগ লাইট ও সাউন্ড সিগন্যাল সিস্টেম থাকবে।
👮 মেলার নিরাপত্তা
১) ১,১৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা ও ২০টি ড্রোন দিয়ে মেলা এলাকা নজরদারিতে থাকবে।
২) ১২,০০০-এর বেশি পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন থাকবে।
৩) কিউআর কোড রিস্টব্যান্ড ব্যবহারে হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের খোঁজ সহজ হবে।
🚒 অগ্নি নিরাপত্তা
১) ১২টি অস্থায়ী ফায়ার স্টেশন এবং ৭৫টি দমকল ইঞ্জিন মোতায়েন থাকবে।
২) খোলা মাঠে রান্না সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
🏥 স্বাস্থ্য ও জরুরি পরিষেবা
১) মেলা এলাকায় ৫টি অস্থায়ী হাসপাতাল ও আইসিইউ থাকবে।
২) ৪টি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স ও ১টি হেলিকপ্টার প্রস্তুত থাকবে।
🌿 পরিবেশ রক্ষা
১) প্লাস্টিক নিষিদ্ধ। প্লাস্টিক সমস্ত দর্শনার্থী এবং পরিবেশের জন্য খুবই খারাপ। তাই প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
২) ১০,০০০ শৌচালয় ও ৭টি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইউনিট থাকবে।
Gangasagar Mela Lost and Found Camp
কিছু জরুরি গুরুত্বপূর্ণ নাম্বার আপনাদের জানা দরকার। আপনার কেউ পরিবারের সদস্য হারিয়ে গেলে নিচের নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন।

ডিজিটাল সুবিধা ( Gangasagar Mela Digital Facility)
- “Go Gangasagar App” থেকে রুট, হেল্পলাইন ও ই-দর্শনের তথ্য জানা যাবে।
- QR কোড স্ক্যান করে নিকটবর্তী সুবিধা (জল, শৌচালয়, এটিএম) জানা যাবে।
- বিনামূল্যে Wi-Fi ও বড় স্ক্রিনে লাইভ আপডেট থাকবে।
গঙ্গাসাগর মেলা : দর্শনীয় স্থানগুলি ( Top 5 Visiting Places in Gangasagar Mela)

🕉️ ১. কপিল মুনি আশ্রম
গঙ্গাসাগরের আধ্যাত্মিক কেন্দ্র। পুণ্য স্নানের পর এখানে দর্শন করলে ধর্মীয় পূর্ণতা লাভ হয়।
🌅 ২. বকখালি সমুদ্র সৈকত
গঙ্গাসাগর থেকে প্রায় ৩০ কিমি দূরে। এখানে সূর্যাস্ত ও সৈকতের সৌন্দর্য মনোমুগ্ধকর।
🐦 ৩. Henry’s Island
নিঃশব্দ প্রাকৃতিক পরিবেশ ও পাখির অভয়ারণ্যের জন্য বিখ্যাত। যারা ভিড় এড়িয়ে প্রকৃতির মাঝে থাকতে চান, তাদের জন্য আদর্শ জায়গা।
🛕 ৪. কাকদ্বীপ
ফেরিঘাটের কাছেই ছোট শহর। এখান থেকে স্থানীয় বাজার ও মন্দির ঘোরা যায়।
🏝️ ৫. ফ্রেজারগঞ্জ ও জামবুদ্বীপ
ফ্রেজারগঞ্জে রয়েছে সুন্দর সৈকত এবং পাখি পর্যবেক্ষণের সুযোগ। জামবুদ্বীপে বিশেষ ধর্মীয় মাহাত্ম্য রয়েছে, যা তীর্থযাত্রীদের আকর্ষণ করে।
Travel Tips (ভ্রমণ টিপস)
সময় বেছে নিন: ১৪ জানুয়ারিতে ভিড় বেশি হয়, তাই সম্ভব হলে ১২ বা ১৩ জানুয়ারি স্নান করুন।
পোশাক: হালকা জ্যাকেট ও আরামদায়ক জুতো নিন।
জিনিসপত্র: ছোট ব্যাগে প্রয়োজনীয় জিনিস রাখুন, বেশি নগদ বহন করবেন না।
স্বাস্থ্য: ওষুধ, পানির বোতল ও ফার্স্ট এইড কিট সঙ্গে রাখুন।
Frequently Asked Questions (সাধারণ প্রশ্নোত্তর)
উত্তর: ১৪ জানুয়ারি ২০২৬, মকর সংক্রান্তির দিন।
উত্তর: হ্যাঁ, জিপিএস ট্র্যাকিং ও লাইফ জ্যাকেট ব্যবহারে যাত্রা নিরাপদ।
উত্তর: gangasagar.in বা “Go Gangasagar” অ্যাপ থেকে অনলাইনে দেখা যাবে।
মেলার তারিখ: ৮ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত
শেষ কথা (Conclusion)
গঙ্গাসাগর মেলা ২০২৬ শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি ভারতের ঐতিহ্য ও মানবিক সংহতির প্রতীক। আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রশাসনিক উদ্যোগের ফলে এখন এই মেলা আরও নিরাপদ ও সহজ হয়েছে। তাই প্রস্তুতি নিয়ে যান, সতর্ক থাকুন, এবং গঙ্গাসাগরের পবিত্র পরিবেশে নিজেকে নিমজ্জিত করুন। এবং এই গঙ্গাসাগর মেলা সম্পর্কে আপনাদের কোনো অভিজ্ঞতা থাকলে নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। “জয় কপিল মুনির জয়, জয় কপিল মুনির জয়, জয় কপিল মুনির জয়“।
⚠️ Disclaimer:এই পোস্টের তথ্য ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত উপলব্ধ সরকারি ও সংবাদ সূত্রের উপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে। সময়সূচি ও ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন হতে পারে। সর্বশেষ আপডেটের জন্য সরকারি সাইট gangasagar.in দেখুন।
▪️Gangasagar Mela: Official Website
▪️How To Reach Gangasagar: Read Here

আমি Biswajit Mandal, একজন অভিজ্ঞ Content Creator, YouTuber, এবং Professional Content Writer। গত ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমি নিয়মিতভাবে সরকারি প্রকল্প, চাকরি সংক্রান্ত তথ্য, ক্যারিয়ার গাইড, স্কলারশিপ, ও অনলাইন ফর্ম ফিলাপ সংক্রান্ত বিষয়গুলো সাধারণ মানুষের কাছে সহজ ভাষায় উপস্থাপন করে আসছি।